আধুনিক অর্থনীতিবিদগণ অর্থব্যবস্থার সহজতর বিশ্লেষণের জন্য অর্থনীতিকে দুটি প্রধান শাখায় ভাগ করেছেন। ১৯৩৩ সালে সুইডিস অর্থনীতিবিদ র্যাগনার ফ্রিশ সর্বপ্রথম অর্থনীতিতে `Micro` এবং `Macro` এ শব্দ দুটি ব্যবহার করেন। এরপর থেকে বিশ্বের সর্বত্রই এ ধরনের বিভক্তির আলোকে অর্থনীতির বিষয়বস্তুকে বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। ব্যষ্টিক অর্থনীতির পরিধি ছোট বিধায় এ অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলো আলোচিত হয়। অন্যদিকে সামষ্টিক অর্থনীতিতে অর্থনীতির সামগ্রিক দিক আলোচিত হয়। ব্যষ্টিক চলক (Micro variable) ও সামষ্টিক চলক (Macro variable) হলো এ দুই অর্থনীতির পৃথক পৃথক গাণিতিক প্রকাশ।

ব্যষ্টিক অর্থনীতির সংজ্ঞাঃ প্রাচীন গ্রিক শব্দ `Mikros` থেকে ইংরেজি `Micro` শব্দটির উৎপত্তি, যার অর্থ ক্ষুদ্র। উনিশ শতক পর্য্ন্ত অর্থনীতিতে এ শব্দটির ব্যবহার ছিল না। ১৯৩৩ সালের শুরুতে প্রফেসর র্যাগনার ফ্রিশ সর্বপ্রথম অর্থনীতিতে `Micro` শব্দটি ব্যবহার করেন। এতে সামগ্রিক অর্থনীতি থেকে কতিপয় ক্ষুদ্র অংশকে পৃথকভাবে বিবেচনা করা হয়। আভিধানিক অর্থে Micro বা ব্যষ্টিক শব্দের অর্থ হলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একক। তাই অর্থনীতির যে শাখায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র অংশ বা এককের অর্থনৈতিক আচরণ বিশ্লেষণ করা হয় তাই ব্যষ্টিক অর্থনীতি।
সামষ্টিক অর্থনীতির সংজ্ঞাঃ ইংরেজি `Micro` শব্দটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ `Mikros` থেকে নেওয়া হয়েছে, যার অর্থ হলো বিশাল বা বৃহৎ। সামষ্টিক অর্থনীতিতে গোটা অর্থব্যবস্থার অখণ্ড রূপ আলোচিত হয়। অর্থব্যবস্থার প্রতিটি অংশের পৃথক পৃথক আলোচনা ক্ষুদ্র পরিসরে না করে সামগ্রিক কার্যাবলি বিশ্লেষণই সামষ্টিক অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য। জে. এম. কেইনসই সর্বপ্রথম এ অর্থনীতির প্রসার ও বিশ্লেষণ পদ্ধতির উপর গুরুত্বারোপ করেন। অর্থনীতির যে শাখায় একটি অর্থব্যবস্থার সামগ্রিক আচরণ বিশ্লেষণ করা হয় তাকেই সামষ্টিক অর্থনীতি বলে।