এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই দেশ। আমরা দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে অর্জন করেছি স্বাধীনতা। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লাখো লাখো মানুষ। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের প্রেক্ষিতে ৬৭৬ জনকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা।
মুক্তিযুদ্ধের খেতাবঃ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকলের মধ্যে ৬৭৬ জনকে ৪ ক্যাটাগরিতে সম্মান প্রদান করা হয়।
১. বীরশ্রেষ্ঠ: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার হচ্ছে বীরশ্রেষ্ঠ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ্রহণকারী ৭ জনকে (মরণোত্তর) বীরশ্রেষ্ঠ পদক প্রদান করা হয়। এরা হলেন- ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ, ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন, সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান এবং সিপাহি মোহাম্মদ হামিদুর রহমান।
২. বীর-উত্তম: বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার হলো বীর-উত্তম। মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৬৮ জনকে বীরউত্তম উপাধি দেওয়া হয়।
৩. বীর-বিক্রম: বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার বীর-বিক্রম পদবি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৭৫ জনকে বীরবিক্রম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
৪. বীর-প্রতীক: বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার হলো বীর-প্রতীক উপাধি। ৪২৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে এই উপাধি প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে দুজন মহিলাও আছেন। তারা হলেন তারামন বিবি ও ডা. সেতারা বেগম। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদিবাসী নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বীর-প্রতীক উপাধি প্রদান করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ, বীর-উত্তম, বীর-বিক্রম ও বীর-প্রতীক এই চারভাগে বিভক্ত করে কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাকে তাদের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হলেও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধা সবসময় আমাদের নিকট সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। যতদিন এই বাংলাদেশ থাকবে ততদিন সকল মুক্তিযোদ্ধার নাম স্মরণ করা হবে অত্যন্ত সম্মানের সাথে।